ইসলাম শান্তি, ভ্রাতৃত্ব এবং পারস্পরিক সম্মানের ধর্ম। এই ধর্মে মানুষকে কষ্ট দেওয়া একটি জঘন্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। কোরআন ও হাদিসে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার বিভিন্ন রূপ এবং এর ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মানুষকে কষ্ট দেওয়ার বিভিন্ন উপায় এবং এর দুনিয়াবী ও আখিরাতের পরিণতি সম্পর্কে বিশ্লেষণ করব।
মানুষকে কষ্ট দেওয়ার বিভিন্ন ধরণ:
-
গালিগালাজ: মুসলমানকে গালি দেওয়া একটি কবীরা গুনাহ। রাসূল (সা.) বলেছেন, "মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসিকী এবং তার সাথে লড়াই করা কুফরী।"
-
গীবত-তোহমত: গীবত অর্থাৎ অনুপস্থিত কারো সম্পর্কে মন্দ কথা বলা এবং তোহমত অর্থাৎ মিথ্যা অপবাদ আরোপ করা। ইসলামে গীবত-তোহমতকে একটি মারাত্মক গুনাহ হিসেবে গণ্য করা হয়।
-
চোগলখুরী: দুই ব্যক্তির মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে তাদের মধ্যে মন্দ কথা বলাকে চোগলখুরী বলে।
-
মন্দ নামে ডাকা: কোন ব্যক্তিকে তার পছন্দ নয় এমন নামে ডাকাও একটি গুনাহ।
-
উপহাস করা: কোন ব্যক্তিকে তার দৈহিক বা মানসিক দুর্বলতার জন্য উপহাস করা ইসলামে নিষিদ্ধ।
-
তুচ্ছজ্ঞান করা: কোন ব্যক্তিকে তার অবস্থানের কারণে তুচ্ছজ্ঞান করাও একটি গুনাহ।
মানুষকে কষ্ট দেওয়ার পরিণতি কি?
মানুষকে কষ্ট দেওয়ার পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। এর দুনিয়াবী ও আখিরাতের পরিণতি নিম্নরূপ:
-
দুনিয়াবী পরিণতি: মানুষকে কষ্ট দেওয়া সমাজে বিদ্বেষ ও শত্রুতা সৃষ্টি করে। এতে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়।
-
আখিরাতের পরিণতি: ইসলামে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার শাস্তি অত্যন্ত কঠিন। গুনাহগারকে কিয়ামতের দিন জাহান্নামের আগুনে পুড়তে হবে।
হাদিসের আলোকে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার কুফল সম্পর্কে কি বলা হয়েছে?
রাসূল (সা.) মানুষকে কষ্ট দেওয়ার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
-
গীবতের শাস্তি: রাসূল (সা.) বলেন, "যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের গীবতের বিনিময়ে এক গ্রাসও খাদ্য ভক্ষণ করবে, আল্লাহ তাকে সমপরিমাণ জাহান্নামের আগুন ভক্ষণ করাবেন।"
-
মন্দ নামে ডাকার শাস্তি: রাসূল (সা.) বলেন, "তোমরা একে অপরকে মন্দ লকবে ডেকো না। বস্ত্ততঃ ঈমান আনার পর তাকে মন্দ নামে ডাকা হ’ল ফাসেকী কাজ।"
-
তুচ্ছজ্ঞান করার শাস্তি: রাসূল (সা.) বলেন, "একজন মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে তার ভাইকে হেয় জ্ঞান করে।"