সাধারণ ডট নেটে আপনাকে স্বাগতম! রেজিষ্ট্রেশন করে আজই আমাদের পরিবারের সদস্য হয়ে যান...

বিজ্ঞান ও প্রকৌশল - প্রশ্ন উত্তর

0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
পারফিউম ও লেন্স ক্লিনারের বিক্রিয়ার কি উৎপন্ন হয়?

পারফিউমে সাধারণত ইথানল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু লেন্স ক্লিনার হিসেবে ব্যবহার করা হয় এরকম অনেক যৌগ আছে। যেমনঃ অ্যামোনিয়া, আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ইত্যাদি। 


ইথানলের সাথে অ্যামোনিয়ার বিক্রিয়াঃ C2H5OH (ইথানল) + NH3 (অ্যামোনিয়া) --> C2H5NH2 (ইথাইল অ্যামিন) + H2O (পানি)


ইথানলের সাথে হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের বিক্রিয়াঃ C2H5OH (ইথানল) + H2O2 (হাইড্রোজেন পার অক্সাইড) --> CH3CHO (অ্যাসিটালডিহাইড) + 2H2O (২ অণু পানি)


ইথানলের সাথে আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল এর বিক্রিয়াঃ যেহেতু এখানে দুইটি যৌগ-ই অ্যালকোহল তাই সাধারণ তাপমাত্রা ও চাপে কোনো বিক্রিয়া করবে না। 


0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
যারা জন্মান্ধ তারা কি আসলে জানে রঙ বলতে কিছু আছে?
সিম্পলি আপনাকে যদি বলা হয় এমন এক বস্তু কল্পনা করুন যেটা আপনি কখনো দেখেনই নি তাহলে কি আপনি সেটা পারবেন? এটা মাথায় রেখে আপনি যত ধরণের বস্তুই কল্পনা করেন না কেন দেখবেন এর আকার, আকৃতি, রঙ আপনার দেখা কোনো না কোনো বস্তুর সাথে মিল রয়েছে। আমাদের ব্রেইন নতুন কোনো অবয়ব বানাতে পারে না কখনো, যা তার মেমোরিতে আছে তাই ঘষা-মাজা করে অন্য ভাবে আপনার কাছে রিপ্রেজেন্ট করে।

বিষয়টা এরকমই। যারা অন্ধ তাদের এই দুনিয়ার কোনো বস্তুর সম্পর্কেই আইডিয়া এই যে এটা কিরকম। একটা বস্তুকে হাত দিয়ে স্পর্শ করে সব কিছু পর্যবেক্ষণ করে আপনি এর আকার বা আকৃতি সম্পর্কে আইডিয়া পাবেন কিন্তু রঙ সম্পর্কে কোনো আইডিয়া পাবেন কি যে এটার রঙ কি? অবশ্যই না। দেখতে পারাও এক ধরণের অনুভুতি যে অনুভুতি তাদের মধ্যে নাই। তারা এই অনুভুতি কল্পনাও কুরতে পারে না। তাই অন্ধরা আসলে জানেই না রঙ কি জিনিস, জন্মগত অন্ধ যারা তারা শুধু একটাই রঙ বুঝতে পারে সেটা হলো কালো। কালো ছাড়া তারা আর কোনো রং-ই কল্পনা করতে পারে না। 
0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
ফ্যানে নেগেটিভ আয়নের কাজ কি? কেন প্রতিটি ফ্যানে এটি লাগানো থাকে?

এটাকে বলে আয়নাইজার আর এর কাজ হলো বাতাস থেকে ছোট ছোট কণা যেমনঃ ধুলাবালি, সিগারেটের ধোয়া ইত্যাদি দূর করা। সাধারণত ধুলাবালি পজিটিভ চার্জ যুক্ত হয় তাই নেগেটিভ আয়ন দিয়ে এদের সহজেই আকর্ষণ করানো যায়। আয়নাইজার বাতাসে নেগেটিভ আয়ন ছড়িয়ে দেয়, নেগেটিভ আয়ন পজিটিভ চার্জ যুক্ত বিষাক্ত কণা গুলোকে টিউট্রালাইজ (ধ্বংস করে বা নিচের দিকে ফেলে দেয়) করার মাধ্যমে বাতাসকে আরও পিউরিফাই করে দেয়। এজন্যই মুলত আয়নাইজার ব্যবহার করা হয়। আবার কোনো কোনো গবেষণায় দেখা গেছে, আয়নাইজার ভাইরাসকেও মেরে ফেলতে পারে। 


তবে এর কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। আয়নাইজার বাতাসে নেগেটিভ আয়নের পাশাপাশি ও্জোন গ্যাসও (Ozon Gas) ছড়ায়। ওজোন গ্যাসের কারণে ভাইরাস মরে যায় ঠিকই কিন্তু এটি আমাদের ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে। আবার আইয়নাইজার কেবল ছোট ছোট কণা গুলোকেই নিউট্রালাইজ করতে পারে কিন্তু বড় কণাগুলোকে পারে না। তাই যাদের অ্যাজমা বা এলার্জি আছে তাদের জন্য এটা তেমন কোনো কাজে আসে না। 


সোর্স ও বিস্তারিতঃ https://www.healthline.com/health/what-does-an-ionizer-do

0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
পৃথিবীকে কি একটি ব্ল্যাকহোলে পরিণত করা সম্ভব?

ব্ল্যাকহোল হওয়ার প্রথম শর্ত হচ্ছে, সেই বস্তুকে তার শোয়ার্জশিল্ড ব্যাসার্ধ (Schwarzschild Radius) এর মধ্যে সংকুচিত করতে হবে। এই শর্ত অনুযায়ী, পৃথিবীর শোয়ার্জশিল্ড ব্যাসার্ধ হয় ৮.৮৭ মিলিমিটার বা প্রায় ৯ মিলিমিটার যা একটি মার্বেলেরই সমান। তবে "ছোট্ট একটু জায়গায় অসীম পরিমাণ ভরের বস্তু থাকতে হবে" কথাটায় ভুল আছে। Singularity এর সঙ্গা অনুযায়ী এই কথাটি কারেকশন করলে হবে, "ছোট্ট একটু জায়গায় বস্তুর ঘনত্ব অসীম হতে হবে"। তাই সূর্য, পৃথিবী বা যেকোনো বস্তুর ভর অপরিবর্তিত রেখে যদি সেই বস্তুকে শোয়ার্জশিল্ড ব্যাসার্ধে সংকুচিত করা হয় তাহলে সেটিও ব্ল্যাকহোল হতে পারে। 


সিঙ্গুলারিটি সম্পর্কে জানুনঃ https://www.livescience.com/what-is-singularity


0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
মাইক্রোওভেনের সামনে দাড়ালে কি মাথা গরম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে?
মাইক্রোওয়েভের সামনে দাঁড়ালে আপনার ব্রেইন বা মাথা গরম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম বা নেই বললেই চলে।কারণ মাইক্রোওয়েভ ওভেন তৈরি করার সময় এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যাতে রেডিয়েশন বা তেজস্ক্রিয়তা বাইরে না আসতে পারে। যদি মাইক্রোওয়েভের দরজা ঠিকমতো বন্ধ থাকে এবং ওভেনের কোনো অংশ ভাঙা না থাকে তাহলে রেডিয়েশন বাইরে আসার কথা নয়। তাই আপনার ব্রেইন বা মাথায় কোনো ইফেক্টও ফেলবে না। 
0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
ছাদে পানি জমা করে রাখলে কি রুমে গরম কমে?

হ্যা, ছাদে পানি রাখলে আপনার রুমের গরম কিছুটা কমতে পারে। 


কংক্রিটের ছাদ দিনের বেলা সূর্য থেকে তাপ শোষণ করে আর নিচের দিকের রুম গুলোতে সেই তাপ রিলিজ করতে পারে। তাই ছাদের সব থেকে নিচের রুমগুলোতে গরম সবথেকে বেশি থাকে। কিন্তু আপনি যদি আপনার বাসার ছাদে পানি রাখেন তাহলে কিছুটা উপকারই হবে। পানিও সুর্যের তাপ শোষণ করে কিন্তু কংক্রিটের ছাদের মতো সেটা আর নিচেরে দিকে রিলিজ করে না। পানি যখন বাষ্পে পরিণত হয়, তখন সেটি ছাদ থেকে তাপ শুষে নেয় আর একে বলে Evaporative Cooling Effect। 


ফলে ছাদের নিচে থাকা রুম গুলো তুলনামূলক ঠান্ডা থাকে। আবার ছাদে পানি রাখলে সুর্যের তাপ সরাসরি কংক্রিটের উপর আসতে পারে না, কারণ কংক্রিটের উপরে একটা পানির স্তর থাকে তখন। এজন্য ছাদ তখন তুলনামূলক কম তাপ শোষণ করতে পারে। 


0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
একটি মুরগি কি হঠাৎ করে মোরগে পরিণত হতে পারে?

এটা অসম্ভব কিছু না, হরমোনের প্রভাবে মুলত এরকটা ঘটে থাকে। এর আগেও এরকম অনেক ঘটনা দেখা গেছে। মুরগির শরীরের থাকে এস্ট্রোজেন হরমোন যা স্ত্রীলিঙ্গের বৈশিষ্ট গুলো প্রকাশ করে। 


কিন্তু কোনো কারণে যদি মুরগির ডিম্বাশয় নষ্ট হয়ে যায় বা ডিম্বাশয় কার্যক্ষমতা হারায় তাহলে এই এস্ট্রোজেন হরমোন কমে যায় আর টেস্টোটেরন হরমোন বেড়ে যায়। এই টেস্টোটেরন হরমোন মুরগির শরীরে পুংলিঙ্গের বৈশিষ্ট অর্থাৎ মোরগের বৈশিষ্ট ফুটিয়ে তুলতে থাকে। এজন্য তখন ধীরে ধীরে মুরগি থেকে মোরগের মতো বৈশিষ্ট পেতে থাকে। তখন মুরগিটির ঝুটি বড় হতে থাকে, মুরগি থেকে মোরগের ডাকে পরিবর্তিত হতে থাকে, পালকের রঙে পরিবর্তন আসতে থাকে, এমনকি।


 

যেহেতু তার ডিম্বাশয় নষ্ট হয়ে গেছে তাই তখন ডিম দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না অর্থাৎ ডিম পারা একদম বন্ধ করে দেয়। এরকম ঘটনাকে বলে মুরগির "Spontaneous Sex Reversal"। এরকমটা হওয়ার কারণে মুরগির বাহ্যিক ও আচরণগত পরিবর্তন দেখা গেলেও জিন কিন্তু পরিবর্তন হয় না। তার দেহে একটা মুরগির জিনই থাকে। 


আরও বিস্তারিত জানতেঃ

  • https://www.livescience.com/13514-sex-change-chicken-gertie-hen-bertie-cockerel.html
  • https://animals.howstuffworks.com/birds/what-cluck-case-gender-changing-hen.htm

0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
সৌর ঝড় কি? কি কি সমস্যা হতে পারে সৌরঝড়ের কারণে?
সৌড় ঝড় (Solar Strom) এর প্রভাব সাধারণত নির্ভর করে এর তীব্রতার উপর। আর এর তীব্রতা মাপার জন্য তৈরি করা হয়েছে G-Scale (Geomagnetic Scale). এই স্কেল অনুযায়ী, সৌর ঝড়ের তীব্রতা G1, G2, G3, G4 ও G5 হিসেবে প্রকাশ করা হয়। যেখানে G1 হচ্ছে সব থেকে কম তীব্রতা ও G5 হচ্ছে সবথেকে বেশি। 

তাই সৌর ঝড়ের তীব্রতা কোনো স্কেলে পড়ে এটার উপর ডিপেন্ড করে ধারণা করা হয় এর প্রভাব কিরকম হতে পারে। তীব্রতা বেশি হলে বিঘ্নতার সমাধান করতে বেশি সময় লাগবে। যেমনঃ ২০২৪ সালের মে মাসে একটি শক্তিশালী সৌর ঝড় (G5 স্তরের) পৃথিবীতে আঘাত হানে। এই ঝড়ের ফলে GPS সিস্টেম, স্যাটেলাইট যোগাযোগ এবং কিছু কিছু বিদ্যুৎ গ্রিডে সাময়িক বিঘ্ন দেখা যায়।

আবার এটা শুধু তীব্রতার উপরেই ডিপেন্ড করে না, কোন প্রযুক্তির উপর প্রভাব পড়েছে সেটাও অনেক বড় ফ্যাক্টর এখানে। সৌর ঝড়ের সময় সূর্য থেকে নির্গত করোনাল মাস ইজেকশন (CME) পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের সঙ্গে এক প্রকার সংঘর্ষ করে যার ফলে ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় সৃষ্টি হয়। এই ঝড়ের ফলে Geomagnetically Induced Current (GIC) তৈরি হয় যা বিদ্যুৎ গ্রিড, স্যাটেলাইট এবং সমুদ্রতল ফাইবার অপটিক কেবলসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সিস্টেমে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। 

তাই বিদ্যুৎ গ্রিডে যদি কোনো ঝামেলা হয় সেটা সাড়াতে যেসময় লাগতে পারে তার তুলনায় যদি সাবমেরিন ক্যাবল (ফাইবার অপটিক) এর ঝামেলা হলে সাবমেরিন ক্যাবলের ঝামেলা সাড়াতে বেশি সময় লাগবে এটাই স্বাভাবিক কারণ সেটা সমুদ্রের নিচে। 

তবে আপনার দেওয়া ফটোকার্ডে যে সৌড় ঝড়ের কথা বলা হয়েছে, সেটা CNN থেকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত G4 স্কেলে রয়েছে। গত ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত এটি G3 স্কেলে হচ্ছিলো। কিন্তু এই সৌড় ঝড়ের কারণে মেজর বা গুরুতর কোনো সমস্যা হয়েছে ইন্টারনেট বা অন্যান্য সিস্টেমে - এরকম কোনো খবর পাওয়া যায় নি। এখন পর্যন্ত সব কিছু ঠিকঠাক ভাবেই চলছে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। 

তথ্যসুত্রঃ

https://www.swpc.noaa.gov/noaa-scales-explanation

https://www.earth.com/news/strong-geomagnetic-solar-storm-alert-issued-auroras-expected-farther-south/
0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
মিলনের পর স্ত্রী অক্টোপাসরা কেন পুরুষ অক্টোপাসকে মেরে ফেলে?
Blue-Lined Octopus এর মতো কিছু অক্টোপাস প্রজাতি মিলনের পর স্ত্রী অক্টোপাস পুরুষটি অক্টোপাসকে খেয়ে ফেলে। এটাকে বলে Sexual Cannibalism. এটা শুধু অক্টোপাস নয় বরং আরও অনেক প্রাণির মধ্যেই দেখা যায় যেমনঃ কিছু প্রজাতির মাকড়সা, সাপ ইত্যাদি। 

স্ত্রী অক্টোপাস কেন পুরুষ অক্টোপাসকে মিলনের পর খেয়ে ফেলে এর পিছনে কিছু কারণ আছে। স্ত্রী অক্টোপাস মিলনের সাধারণত ৪০ দিন পর ডিম পাড়ে। একবার ডিম পাড়ার পর তারা তাদের ডিমের যত্ন নেওয়া শুরু করে। এই সময়টা তারা কোনো খাবার খায় না। এমনকি তারা পরবর্তীতে তাদের বাচ্চাদের দেখাশোনার সময়টাতেই কিছু খায় না। তাই ডিম পাড়ার আগে তাদের যতটা সম্ভব খাবার খেতে হবে যাতে তারা পরবর্তীতে ব্রুডিংয়ের জন্য শক্তি সঞ্চয় করতে পারে। হতে পারে তাদের কয়েক মাস পর্যন্ত না খেয়ে থাকা লাগতে পারে। 

আবার মিলনের পর পুরুষ অক্টোপাস সাধারণত কিছুদিন বাঁচে মাত্র। অপরদিকে স্ত্রী অক্টোপাসেরও পুষ্টি দরকার অনেক। এজন্যই স্ত্রী অক্টোপাস পুরুষ অক্টোপাসকে খেয়ে ফেলে। 

তথ্যসুত্রঃ 

https://www.npr.org/2025/03/23/nx-s1-5334490/male-octopuses-are-usually-killed-by-females-after-mating-now-they-may-have-found-a-way-out
0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
বরফের যুগে মানুষ কিভাবে বেচে ছিলো?
বরফের যুগ বলতে সেই সময়টাকেই বুঝানো হয় যেসময়টায় পৃথিবীর তাপমাত্রা এতটাই কমে গিয়েছিল যে বিশাল অঞ্চল বরফে ঢেকে গিয়েছিল। তবে এমনটা না যে পুরো পৃথিবী বরফে ঢাকা ছিল। বরং কিছু অঞ্চল তাপমাত্রায় সহনীয় ছিল যেখানে প্রাণীরা বেঁচে থাকতে পারত।

বরফের যুগেও মানুষ ছিল তবে আধুনিক মানুষ না। আধুনিক মানুষের (Homo sapiens) পূর্বপুরুষরা যেমন Neanderthals, Homo erectus এরা তখন পৃথিবীতে ছিল।  আমাদের এসব পূর্বপুরুষদের ঠান্ডায় টিকে থাকার মতো দারুণ সক্ষমতা ছিলো। তাদের শক্তি ছিল সাথে অসাধারণ বুদ্ধিও। আমাদের মতো আধুনিক মানুষের প্রত্যাবর্তন হয় বরফের যুগের শেষের দিকে। 

তখনকার সময়, আগুন আবিষ্কার করে মানুষ শীত থেকে বাঁচতে পেরেছিল। তারা পশু শিকার করে তাদের চামড়া দিয়ে গরম পোশাক বানাতো শীত নিবারণের জন্য। আবার বরফ থেকে বাঁচার জন্য তারা গুহায় বাস করতো যেগুলো স্নো-স্ট্রোম থেকে কিছুটা সুরক্ষা দিতো। সব থেকে ভালো আর শক্তিশালী একটি দিক হলো আমাদের পূর্বপুরুষরা দলবদ্ধ হয়ে থাকতো, একে অপরকে সাহায্য করতো আর পরিস্থিতি বুঝে নিজেদের পরিবর্তন করতে পারতো। মানে যা করতো সব তারা এক হয়েই করতো। এভাবেই তারা ধীরে ধীরে তারা পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে শিখে যায়। 

আবার মানুষ ছাড়া বাকি সব প্রাণী বরফের নিচে ছিল এমন ধারণাও ঠিক নয়। কিছু প্রাণী যেমন ম্যামথ, স্যাবার-টুথ টাইগার, বরফে ঠিকে থাকার ক্ষমতা অভিযোজন করেও টিকে ছিলো। আবার কিছু প্রাণী দক্ষিণে উষ্ণ অঞ্চলে চলে গিয়েছিল।

আজ থেকে প্রায় ১১,৭০০ বছর আগে, যখন পৃথিবী আবার একটু একটু করে উষ্ণ হতে শুরু করলো তখন মানুষ এক জায়গায় স্থায়ী ভাবে বাস করা শুরু করে। সেখান থেকেই গড়ে উঠলো কৃষি, সমাজ আর ধীরে ধীরে সভ্যতার জন্ম হলো। তখনই প্রত্যাবর্তন হয় আজকের আমাদের মতো আধুনিক মানুষের।

তথ্যসুত্রঃ https://www.discovermagazine.com/planet-earth/how-humans-survived-the-ice-age
0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
আমরা সবখানে এলিয়েনদের যে ছবিটি দেখি এটা কি এলিয়েনদের আসল রুপ? বিজ্ঞানীরা কিভাবে জানলো এলিয়েনরা দেখতে এরকম?

আমরা সব জায়গায় এলিয়েনদের যে ছবিটি দেখতে পাই সেই অবয়বের নাম হলো 'গ্রে এলিয়েন (Gray Alien)'. এটি পুরোটাই একটি কাল্পনিক কারণ এখন পর্যন্ত এলিয়েনদের অস্তিত্বই প্রমাণিত হয় নি তাহলে এলিয়েনদের বাস্তব অবয়বের কোনো প্রশ্নই আসে না। 


গ্রে এলিয়েনদের ডিজাইন কনসেপ্টটা আসলে বিজ্ঞানের চেয়ে বেশি গড়ে উঠেছে কল্পনা, পপ কালচার আর মানুষের অবচেতন মনের গহীন থেকে। সবকিছুর শুরু ১৯৪৭ সালের Roswell Incident দিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর ছোট্ট শহর রসওয়েলে একটি 'উড়ন্ত বস্তু' ভেঙে পড়ে। প্রথমে সংবাদ মাধ্যম গুলোতে দাবি করা হয়েছিল, সেটি ছিল একটি UFO! ফলে দেশজুড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়—"এলিয়েন কি সত্যিই আমাদের মাঝে এসেছে?" এরপর থেকেই শুরু হয়ে যায় মানুষের ক্রিয়েটিভিটি। এই ঘটনা প্রচার করতে মানুষ এলিয়েনদের বিভিন্ন অবয়ব তৈরি করতে শুরু করে। সেখান থেকে চলে আসে গ্রে এলিয়েনদের ডিজাইন কনসেপ্ট।

কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, পরে যুক্তরাষ্ট্র সরকার জানায় যে ভেঙ্গে পড়া উড়ন্ত বস্তুটি আসলে ছিল একটি "Weather Balloon", যার ছিল গোপন সামরিক পরীক্ষার অংশ (Project Mogul)। 


তারপর ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে ১৯৬১ সালে "বেটি এবং বার্নি হিল" নামে এক দম্পতির দাবি থেকে। তারা একদিন দাবী করে বসেন যে, এক রাতে তারা UFO দ্বারা অপহৃত হয়েছিলেন এবং যারা অপহরণ করেছিল তাদের চেহারা ছিল ঠিক এইরকম। সেই ঘটনার পর থেকেই এই চেহারাটা মানুষের কল্পনার এলিয়েন হিসেবে গেঁথে যায়। তাদের বর্ণনা অনুযায়ী এলিয়েনরা যেরকম দেখতে ছিলো - ধূসর বর্ণের গায়ে, বড় মাথা, বিশাল কালো চোখ, ছোট নাক আর মুখ, আর একদম পাতলা শরীর। সেখান থেকেই গ্রে এলিয়েনদের এই ডিজাইন অনেক জনপ্রিয় হয়ে যায়।


এরপর একে আরও জনপ্রিয় করে তোলে ১৯৭০-এর দশকের সাইফাই সিনেমাগুলো বিশেষ করে স্পিলবার্গের "Close Encounters of the Third Kind" এবং পরবর্তীতে "The X-Files" সিরিজ। এগুলোতে গ্রে এলিয়েনদের এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল যেন এটাই এলিয়েনদের ‘রিয়েল লুক’। আর্টওয়ার্ক, কমিকস, বইয়ের কভার সব জায়গাতেই ওই একই রুপ।


এই ডিজাইনটা এতটাই গভীরভাবে মানুষের মস্তিষ্কে ঢুকে গেছে যে এখন কেউ "এলিয়েন" বললেই আমাদের মনে একদম স্বাভাবিকভাবে এই রূপটাই ভেসে ওঠে। যদিও বাস্তবে এমন কোনো এলিয়েন কখনও পাওয়া যায়নি। 


তথ্যসুত্রঃ https://www.grunge.com/1288445/where-grey-alien-imagery-come-from/


0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
ব্ল্যাক হোলের ভিতর কোনো বস্তু প্রবেশ করলে সেটা আর ফেরত আসতে পারে না কেন?
ব্ল্যাক হোলের সব থেকে বাহিরের অংশ হচ্ছে ইভেন্ট হরাইজন। এই ইভেন্ট হরাইজনের ভিতরে একবার কোনো কিছু প্রবেশ করলে সেটা আর ফেরত আসতে পারে না সেটা যদি আলোও হয় তবুও।

কারণ ইভেন্ট হরাইজনের ভিতরে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির পরিমাণ এতো বেশি যে, সেখান থেকে আবার ফেরত আসতে হলে আলোর বেগের চেয়েও বেশি বেগে পালাতে হবে। কিন্তু আলোর বাস্তবে আলোর বেগই হচ্ছে সর্বোচ্চ বেগ, কোনো বস্তুর বেগ আলোর বেগের থেকে বেশি হওয়া সম্ভব নয়। যেহেতু আলোকে তার নিজের সর্বোচ্চ বেগের চেয়েও বেশি বেগে পালাতে হবে তাই আলো নিজেও ব্ল্যাক হোলের ভিতরে হারিয়ে যায়। 
0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
সাপ বাচ্চা দেয় নাকি ডিম দেয়? মানে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে নাকি সরাসরি গর্ভধারণ করে বাচ্চা দেয়?

সাপ মুলত তিন ভাবে বাচ্চা দিয়ে থাকে। এই অনুযায়ী সাপকে তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়। যেমনঃ


১) ডিম পাড়া সাপ (Oviparous)

২) সরাসরি বাচ্চা জন্ম দেওয়া সাপ (Viviparous)

৩) উপরের দুইটির কম্বিনেশনে বাচ্চা দেওয়া সাপ (Ovoviviparous)



ডিম পাড়া সাপ (Oviparous) : বেশির ভাগ সাপই ডিম পাড়ে। ডিম পাড়ার পর মা সাপ আর সেই সাপ গুলোকে রক্ষা করে না বা ডিমে তা দেয় না। তবে কিছু প্রজাতি যেমন অজগর ডিমে তা দিয়ে থাকে। ডিমগুলো থেকে নির্দিষ্ট সময় পর নিজে নিজেই বাচ্চা বের হয়ে আসে। যেমনঃ অজগর, কোবরা, গোখরা, ভাইপার ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। 


সরাসরি বাচ্চা জন্ম দেওয়া সাপ (Viviparous) : এধরনণের সাপগুলো ডিম না পেরে সরাসরি বাচ্চা জন্ম দেয়। এই সাপগুলোর ডিম মায়ের শরীরের ভেতরেই ফোটে এবং মায়ের শরীর থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে বাচ্চাগুলো বড় হয়। এরপর মা সাপ সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে। যেমনঃ অ্যানাকোন্ডা, গার্টার স্নেক, সি স্নেক, ডেথ অ্যাডার এবং কিছু ভাইপার সাপ উল্লেখযোগ্য।


উপরের দুইটির কম্বিনেশনে বাচ্চা দেওয়া সাপ (Ovoviviparous) : এই ধরনের সাপ ডিম তৈরি করে, কিন্তু ডিমগুলো মায়ের শরীরের ভেতরে থাকে এবং সেখানেই ফুটে বাচ্চা বের হয়। মনে হয় যেন সরাসরি বাচ্চা জন্ম দিচ্ছে কিন্তু আসলে ডিম থেকেই বাচ্চা ফুটে বের হয়। যেমনঃ র‍্যাটেল স্নেক, কপারহেড, ইউরোপিয়ান ভাইপার ইত্যাদি।


আরও পড়ুনঃ https://animals.howstuffworks.com/snakes/how-do-snakes-reproduce.htm


0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্ব দিয়ে রাদারফোর্ডের মডেলের সীমাবদ্ধতা ব্যাখ্যা করা হয়?

বিষয়টি বুঝতে হলে প্রথমে ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্ব এবং রাদারফোর্ডের মডেল সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেওয়া দরকার। 


রাদারফোর্ডের মডেল অনুযায়ী, পরমাণুর কেন্দ্রে একটি নিউক্লিয়াস থাকে এবং ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘোরে। এই ঘূর্ণন একটি ত্বরণ, কারণ ইলেকট্রনের দিক প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হচ্ছে।


ম্যাক্সওয়েলের তড়িৎচুম্বকীয় তত্ত্ব অনুসারে, যখন কোনো চার্জিত কণা (যেমন ইলেকট্রন) ত্বরণ (acceleration) নিয়ে ঘোরে, তখন সেটি তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ (electromagnetic wave) আকারে শক্তি বিকিরণ করে। এই শক্তি বিকিরণের ফলে ইলেকট্রনের শক্তি কমতে থাকে।


যেহেতু ইলেক্ট্রন একটি চার্জিত কণা তাই ম্যাক্সওয়েলের কথা অনুযায়ী এটি যখন নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘুরে তখন এর শক্তি বিকিরণ করে শক্তি কমতে থাকার কথা এবং শক্তি কমতে কমতে একসময় নিউক্লিয়াসে পতিত হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে এমনটা হয় না। ইলেক্ট্রন নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত ঘুরতেই থাকে। 


ইলেক্ট্রনের এই ধর্মকে ম্যাক্সওয়েলের তড়িৎচুম্বকীয় তত্ত্ব দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। কিন্তু ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্বও ভুল নয় বরং এটি বৃহৎ বস্তুর ক্ষেত্রে (ম্যাক্রোস্কোপিক জগত) সফলভাবে কাজ করে। কিন্তু পরমাণুর মতো ক্ষুদ্র বস্তুর ক্ষেত্রে চিরায়ত পদার্থবিদ্যা (Classical Physics) কাজ করে না। এটা ম্যাক্সওয়েলের তড়িৎচুম্বকীয় তত্ত্ব এর একটি সীমাবদ্ধতা।


তাহলে কেন ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্ব দিয়ে রাদারফোর্ডের মডেলের সীমাবদ্ধতা ব্যাখ্যা করা হয়?


রাদারফোর্ডের মডেল যখন প্রস্তাব করা হয় তখন কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ধারণা ছিল না। বিজ্ঞানীরা চিরায়ত পদার্থবিদ্যার উপর নির্ভর করেই সবকিছু ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করতেন। সেই সময়ে ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্ব ছিল অন্যতম প্রতিষ্ঠিত একটি তত্ত্ব। পরবর্তীতে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের আবির্ভাবের পর জানা যায় যে, ইলেকট্রন নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘোরে এবং শক্তি বিকিরণ করে না। কোয়ান্টাম মেকানিক্স অনুসারে, ইলেকট্রনগুলো নির্দিষ্ট শক্তি স্তরে (energy level) থাকে এবং এই স্তরগুলোতে ঘোরার সময় তারা শক্তি বিকিরণ করে না।


আপনার প্রশ্ন ছিল "ভুল দিয়ে ভুল কেমনে ধরলো?"। এখানে ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্ব ভুল নয় বরং রাদারফোর্ডের মডেলের সীমাবদ্ধতা বোঝানোর জন্য এটি একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ম্যাক্সওয়েলের চিরায়ত তত্ত্ব পরমাণুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় - এটা বোঝানোর জন্যই ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্বের সাহায্যে রাদারফোর্ডের মডেলের ত্রুটি দেখানো হয়। এই ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতা থেকেই বুঝা যায় যে এটি ব্যাখ্যা করতে নতুন থিওরি দরকার সেটাই হলো কোয়ান্টাম থিওরি, আর তার প্রথম ধাপ ছিল বোরের মডেল।


আরোও পড়ুনঃ https://quicktakes.io/learn/physics/questions/what-are-the-limitations-of-maxwells-equations-in-modern-physics


0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
ভবিষ্যতে যদি পৃথিবীর বাইরের প্রাণী খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে কি “মানবজাতি” শব্দটার মানে নতুন করে ভাবতে হবে?

সোজা-সাপ্টা ভাবে যদি আপনার প্রশ্নের উত্তর হয় তাহলে সেটা হবে ‘হ্যাঁ’, ভবিষ্যতে যদি সত্যিই পৃথিবীর বাইরে কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব পাওয়া যায় আর বিশেষ করে যদি তারা বুদ্ধিমান হয় তাহলে “মানবজাতি” শব্দটার অর্থ এবং ব্যবহার নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হতে পারে।


মানবজাতির বৈজ্ঞানিক নাম হলো Homo Sapiens যার অর্থ দাঁড়ায় বুদ্ধিমান বা বিবেকসম্পন্ন মানুষ। যদিওবা এখনো এলিয়েনের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয় নি কিন্তু এখনো আমরা বিশ্বাস করি আমরাই এই ইউনিভার্সে সব থেকে বুদ্ধিমান প্রাণী। কিন্তু যদি আমাদের ইউনিভার্সে কোনো বুদ্ধিমান প্রাণীর সন্ধান মিলে তাহলে সর্বপ্রথম আমাদের এই ধারণা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তখন এটা বিচার করতে হবে যে আমরা তাদের থেকে বেশি বুদ্ধিমান নাকি তারা বেশি বুদ্ধিমান, তারা কত এগিয়ে আর আমরা কত এগিয়ে, তাদের চিন্তা-ধারা কিরকম আর আমাদের চিন্তা-ধারা কিরকম, এই মহাবিশ্বে আমাদের স্থান কোথায় আর তাদের কোথায়, তারা আমাদের কিভাবে ট্রিট করবে আর আমরা তাদের কিভাবে ট্রিট করবো ইত্যাদি। 


এসব কিছু বিচার-বিবেচনা করে তখন মানবজাতির এই ধারণাটি আসলেই ঠিক কিনা সেটা নিশ্চিত হওয়া যেতে পারে। তখনই মূলত মানবজাতির আসল সঙ্গা নির্ধারণ নিয়ে আমাদের মনে প্রশ্ন উঠবে। আসলে মানুষ বা মানবজাতি হতে হলে একটি প্রাণীর কি কি বৈশিষ্ঠ্য থাকতে হবে তখন সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। শুধু বুদ্ধিমান আর বিবেকসম্পন্ন হলেই মানুষ হিসেবে সঙ্গায়িত করা হবে নাকি আরও কোনো বৈশিষ্ঠ্য থাকা প্রয়োজন তখন এটা নিয়ে কট্রোভার্সি হতেই পারে। তাই বলাই যায়, ভবিষ্যতে যদি পৃথিবীর বাইরের প্রাণী খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে মানবজাতি শব্দটার মানে নতুন করে ভাবতে হতে পারে। 


For Fun : 

পৃথিবীর মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম Homo Sapiens হলে পৃথিবীর বাহিরের মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম হতে পারে Homo cosmicus.


বিস্তারিতঃ https://newspaceeconomy.ca/2023/09/02/what-might-be-the-cultural-and-societal-implications-of-extraterrestrial-life/


0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
মশা কামড়ালে ফুলে উঠে কেন?

মশা কামড়ালে ত্বক ফুলে ওঠে এর কারণ হলো মশার লালার প্রতি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া। মুলত এর পিছনে দায়ী হিস্টামিন নামক এক রাসায়নিক পদার্থ। 


মশা যখন আমাদের ত্বকে হুল ফোটায়, তখন সে রক্ত জমাট বাঁধা বন্ধ করার জন্য তার লালা আমাদের শরীরে প্রবেশ করায়। মশার লালাতে এমন কিছু উপাদান থাকে যা আমাদের রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না, ফলে মশা সহজে রক্ত চুষতে পারে। আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা মশার লালার এই উপাদানগুলোকে বহিরাগত পদার্থ হিসেবে চিহ্নিত করে। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমাদের শরীর হিস্টামিন নামক রাসায়নিক পদার্থ নির্গত করে। হিস্টামিন রক্তনালীগুলোকে প্রসারিত করে, যার ফলে ঐ স্থানে বেশি রক্ত প্রবাহিত হয়। হিস্টামিন রক্তনালীর দেয়ালকে নরম Permeable করে তোলে, যাতে চারপাশের টিস্যুগুলোতে তরল পদার্থ প্রবেশ করতে পারে। রক্তনালী প্রসারিত হওয়ার কারণে এবং আশে পাশের টিস্যুগুলোতে তরল পদার্থ জমা হওয়ার কারণে ওই স্থানটি ফুলে যায়। হিস্টামিন আমাদের নার্ভকে উত্তেজিত করে, যার ফলে কামড়ানোর স্থানে চুলকানির অনুভূতি হয়। 


অনেকের শরীরে মশার লালার প্রতি বেশি সংবেদনশীলতা থাকে, যার কারণে তাদের কামড়ের স্থানে বেশি ফোলা এবং চুলকানি হতে পারে।


বিস্তারিতঃ https://www.medicalnewstoday.com/articles/320979


0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
আকাশ কি পৃথিবীর অন্তর্গত?
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল আকাশের একটি অংশ, তবে আকাশ শুধুমাত্র বায়ুমণ্ডল নয়। বায়ুমণ্ডলের পরে মহাকাশ এবং তারপর মহাবিশ্বের অন্যান্য গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যালাক্সি ইত্যাদি সবকিছুই আকাশের অংশ। তাই আকাশকে পৃথিবীর অংশ বলা যায় না বরং পৃথিবী আকাশের মধ্যে অবস্থিত।
0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
শুন্য দিয়ে কোনো সংখ্যাকে গুণ করলে সেই সংখ্যার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায় কেন?

প্রথমত, গুণ মানে কী সেটা একটু বুঝা যাক। যখন আমরা বলি ৭ * ৩, এর মানে হলো ৭ কে ৩ বার যোগ করা: ৭ + ৭ + ৭ = ২১। একইভাবে, ৩ * ৭ মানে হলো ৩ কে ৭ বার যোগ করা: ৩ + ৩ + ৩ + ৩ + ৩ + ৩ + ৩ = ২১।

এখন, যখন আমরা বলি ৭ * ০, এর মানে হলো ৭ কে ০ বার যোগ করা। যেহেতু আমরা একবারও যোগ করছি না, তাই আমাদের কাছে কিছুই নেই। সুতরাং, ফলাফল হবে ০। যদি আমরা ৭ কে একবার গুণ করতাম তাহলে হয়ে যোগফল ৭ হয়ে যেতো।


অন্যভাবে চিন্তা করলে, ০ * ৭ মানে হলো ০ কে ৭ বার যোগ করা: ০ + ০ + ০ + ০ + ০ + ০ + ০ = ০। এখানেও ফলাফল ০।


"অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায় কেন" - এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, গুণ করার সময় আমরা একটি সংখ্যাকে অন্য একটি সংখ্যা দিয়ে 'স্কেল' করি বা পরিবর্তন করি। যখন আমরা ০ দিয়ে গুণ করি, তখন আমরা সবকিছুকে ০ এর স্কেলে নিয়ে আসি। তাই অন্য সংখ্যাটির আর কোনো অস্তিত্ব থাকে না, কারণ সবকিছু তখন ০ হয়ে যায়। ০ দিয়ে কোন সংখ্যা বা কত বড় সংখ্যাকে গুণ বা ভাগ করছি সেটা আর ম্যাটার করে না।


0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
টেলিপ্যাথি (Telepathy) কি সম্ভব? ফ্যাক্ট নাকি মিথ?

image


টেলিপ্যাথি (Telepathy) হলো এক ধরনের মানসিক যোগাযোগ মাধ্যম বা প্রক্রিয়া, যেখানে দু’জন ব্যক্তি কোনো প্রকার শারীরিক বা প্রযুক্তিগত মাধ্যম ছাড়াই শুধুমাত্র মনের মাধ্যমে একে অপরের কাছে তথ্য আদান প্রদান করতে পারে। এটি প্যারাসাইকোলজির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং বহু বছর ধরে বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু প্রশ্ন হলো টেলিপ্যাথি কি আদৌ সম্ভব? নাকি এটি শুধুই কল্পনা?


আপনি যদি X-Men সিরিজ দেখে থাকেন তাহলে টেলিপ্যাথির ধারণা আপনার কাছে অনেকটাই ক্লিয়ার হয়ে গেছে। এই সিরিজের মেইন ক্যারেক্টার "প্রফেসর" একটি হেড ব্যান্ড ব্যবহার করে যেকোনো মানুষের মস্তিষ্ক পড়তে পারে ও তার সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এরপর স্টার ওয়ারস এর 'জেডি' এর চরিত্রেও টেলিপ্যাথির ব্যবহার করা হয়। 


এসব তো শুধু মুভি বা ফিকশনের কাহিনি। কিন্তু বাস্তব জীবনে বিজ্ঞানীরা টেলিপ্যাথি নিয়ে বহু গবেষণা করেছেন কিন্তু এখনও কোনো স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে আসলেই একজনের মস্তিষ্ক আরেকজনের মস্তিষ্কের সাথে যোগাযোগ করতে পারে কিনা। মানুষের মস্তিষ্ক ও কম্পিউটারের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করার জন্য Brain-Computer Interface (BCI) টেকনোলজি আবিষ্কার হয়েছে কিন্তু Brain-Brain Interface এখনো আবিষ্কার হয় নি। 


তাহলে আপনার কি মনে হয় যে এটা অসম্ভব? তাহলে কিছু ঘটনার কথা বলি। 


হাভার্ড মেডিকেল স্কুলের ল্যাবে একজন ব্যক্তি তার মস্তিষ্ক এর মাধ্যমে একটি ইদুরের মস্তিষ্কে সিগনাল পাঠানোর মাধ্যমে ইদুরের লেজ নাড়াতে সক্ষম হন। সব থেকে অবাক করার বিষয় হলো তিনি এটি পরীক্ষা করতে গিয়ে ৯৪% সময়ই সফল হন। পরীক্ষাটি এরকম ভাবে করা হয়েছিলো যে, ব্যক্তিটি কম্পিউটারের স্ক্রিনের আলোর দিকে একবার তাকাচ্ছিলো এবং এই তাকানো থেকে একটি সিগনাল পাঠানো হচ্ছিলো একটি আল্ট্রা-সাউন্ড মেশিনে। আল্ট্রা-সাউন্ড মেশিনটি নিম্ন শক্তির আল্ট্রা-সাউন্ট পালস পাঠাচ্ছিলো ইদুরের ব্রেইনে। ইদূরের ব্রেইনের যে অংশ ইদুরের লেজ কন্ট্রোল করে সেই অংশটি এই আল্ট্রা-সাউন্ড পালস রিসিভ করে সেই অনুযায়ী রেসপন্স করতো।


অনেকটা বাইনারি চয়েস বা ইয়েস-নো এর উত্তরের মতো। আলট্রা-সাউন্ড মেশিনটি ইদুরকে বলে দিচ্ছে "লেজ নাড়াতে হবে" অথবা লেজ নাড়াতে হবে না" এরকম। 


উপরের ঘটনাইয় আপনার মনে হতে পারে যে, আরে! এটা তো কো-ইন্সিডেন্স হতেই পারে। তাহলে আরেকটা ঘটনা শুনুন। ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের মিগুয়েল নিকোলেলিস দুইটি ইদুরকে একই সাথে সেম কাজ করানোর জন্য দুই ইদুরের ব্রেইনের মধ্যে মটর কর্টেক্সের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করে। মজার ব্যাপার হলো একটি ইদুর ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার ডারহাম শহরে আর আরেকটি ছিলো ব্রাজিলের নাটালে। 


দুই ইদুরের সামনেই দুইটি করে লিভার রাখা হয়, এই দুইটি লিভারের মধ্যে নির্দিষ্ট একটিতে প্রেস করলে পুরষ্কার হিসেবে একটি ড্রিংক্স বা পানীয় দেওয়া হবে ইদুরকে। পুরষ্কারের লিভার ছিলো Random কিন্তু দুই ইদুরের সামনেই সেম ভাবেই সাজানো ছিল। যখন প্রথম ইদুরটি তার চয়েস সিলেক্ট করে লিভারে প্রেস করে তখন তার মটর কর্টেক্সের ইলেকট্রিক অ্যাক্টিভিটি রেকোর্ড করে সেটিকে একটি সিমপল সিগনালে কনভার্ট করা হয় এবং দ্বিতীয় ইদুরের মটর কর্টেক্সে পাঠানো হয়। তখন দ্বিতীয় ইদুরটি তার চয়েস সিলেকশন করে। এই পরীক্ষার ৬৪% সময়ই ইদুর দুটি একই সাথে পুরষ্কার ওয়ালা লিভারটি প্রেস করতে সক্ষম হয়।


এরকম আরোও অনেক উদাহরণ আছে কিন্তু এর প্রায় সব গুলো পরীক্ষাই উপরের দুইটি পরীক্ষার মতো বাইনারি চয়েসের মতো অথবা ইয়েস-নো। সিম্পল সিগনাল ট্রান্সফারের মতো। কিন্তু যখন বলা হবে আপনি একটি ইদুরকে টেলিপ্যাথির মাধ্যমে বলে দিন "এখন থেকে চলে যাও নাহলে আমি তোমাকে মেরে তাড়িয়ে দিবো"। অথবা আপনি আপনার ভাই বা বোনকে বলছেন "দরজাটি বন্ধ করে দাও"। সেক্ষেত্রে কি হবে? 


উপরের উদাহরণ গুলো কিন্তু বাইনারি চয়েসের মাধ্যমে ব্যাখ্যা বা সলভ করা যায় না। এসব কমান্ডের জন্য ব্রেইন থেকে থেকে অনেক জটিল একটি ইলেকট্রিক অ্যাক্টিভিটি রেকোর্ড হবে এবং সেটিকে যদি একটি সিগনালে কনভার্ট করা হয় সেটিও অনেক জটিল হয়ে যাবে। সেটিকে ডিকোড করে আবার অন্য আরেকটি ব্রেইনকে বুঝানো আরও জটিল। এজন্য এখনো এরকম জটিল কোনো পরীক্ষার সফলতার প্রমাণ পাওয়া যায় নি।



কিছু বিজ্ঞানী দাবি করেন যে, কোয়ান্টাম ফিজিক্সের "এনট্যাঙ্গলমেন্ট" (Quantum Entanglement) তত্ত্ব টেলিপ্যাথির ব্যাখ্যা দিতে পারে। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, দুটি কণা একে অপরের থেকে দূরে থাকলেও একইসাথে প্রতিক্রিয়া করতে পারে। কিন্তু এটি মানুষের মস্তিষ্কে প্রযোজ্য কি না তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।


আবার অনেকে মনে করেন যে, মা এবং সন্তানের মধ্যেও নাকি টেলিপ্যাথিক যোগাযোগ দেখা যায়। অনেক মা দাবি করেন তারা তাদের সন্তানের কান্না বা discomforting আগে থেকেই টের পান। আবার এমন অনেক গল্পও প্রচলিত আছে যেখানে যমজ ভাই-বোন একজন অন্যজনের বিপদ বা কষ্টের অনুভূতি শেয়ার করে। 


মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ "স্টারগেট প্রজেক্ট" নামে একটি গোপন গবেষণা চালায়, যেখানে টেলিপ্যাথি বা রিমোট ভিউয়িং (দূর থেকে দেখার ক্ষমতা) নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। যদিও প্রজেক্টটি পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এর ফলাফল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। 


সব মিলিয়ে যদি একটি সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয় যে টেলিপ্যাথি আসলেই সম্ভব কিনা তাহলে এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে এখনো ধোয়াশা। অনেক অনেক ছোট ছোট পরীক্ষা আছে যেগুলো আসলেই প্রমাণ করে টেলিপ্যাথি আসলেই এক্সিস্ট করে কিন্তু আমরা টেলিপ্যাথির ডিফিনিশন থেকে টেলিপ্যাথিকে যেরকমটা কল্পনা করি অথবা ফিকশনে যেরকমটা দেখে আমরা অভ্যস্থ সেরকম কোনো ঘটনা বা পরীক্ষার প্রমাণ এখনো মিলে নি। 


তবে আমি বিশ্বাস করি একদিন হয়তো সম্ভব হবে। নিউরোসায়েন্স যদি Brain-Computer Interface এর মতো টেকনোলজি আবিষ্কার করে অসাধ্য সাধন করতে পারে তাহলে হয়তো একদিন Brain-Brain Interface ও আবিষ্কার হয়ে যাবে। সেইদিনও হয়তো খুব বেশি দূরে নয়।



Sources: 

------------------

ℹ️ National Geographic : https://www.nationalgeographic.com/science/article/will-we-ever-communicate-telepathically

ℹ️ CIA : https://www.cia.gov/readingroom/collection/stargate

0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
আপনি কিভাবে একজন সুপারহিউম্যান বা সুপারহিরো হতে পারবেন?

image


সুপার হিউম্যান বা সুপার হিরোর কথা বললে আমাদের মাথায় সবার আগে যে নামটা মাথায় আসে সেটা হলো সুপারম্যান। যারা আমার মতো সাই-ফাই মুভি দেখতে পছন্দ করেন তাদের ক্ষেত্রে এই লিস্ট অনেক বড়। কারণ সাই-ফাই মুভি মানেই যেন সুপার পাওয়া বা সুপার হিরোর খেলা। মার্ভেল কমিক্স হলে তো কথাই নাই। কিন্তু এগুলো কি শুধু কমিক্স বা মুভিতেই সম্ভব? আমরা কি সুপার হিউম্যান বানাতে পারি বাস্তবে? 


সুপার হিউম্যান এর সঙ্গা দিতে হলে সুপার হিউম্যান হলো অন্যসব মানুষের থেকে আলাদা এবং তার মধ্যে এমন এক বা একাধিক গুন বা ক্ষমতা আছে যেটা একটা নরমাল মানুষের নেই বা থাকার কথাও না। হতে পারে সে এসব গুন বা ক্ষমতা ন্যাচারালি পেয়েছে অথবা নিজের উপলব্ধি বা প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে অর্জন করেছে। মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের "ক্যাপ্টেন আমেরিকা" বা "দ্যা ইনক্রিডিবল হাল্ক" এর সব থেকে ভালো উদাহরণ। মার্ভেলের X-Men মুভি সিরিজটি দেখলে আপনি এই পুরো কনসেপ্টটাই ক্লিয়ার হয়ে যাবেন।


তাহলে এবার মেইন পয়েন্টে আসা যাক। সুপার হিউম্যান এর সঙ্গা যদি এটাই হয় তাহলে সুপার হিউম্যান আসলেই সম্ভব। আর সেটা অনেক ভাবেই সম্ভব। কিন্তু আজকে আমরা শুধু জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে কিভাবে আপনি একজন সুপার হিউম্যান হতে পারবেন সেটাই আলোচনা করবো। জিনের মিউটেশনের মাধ্যমে চাইলেই আমাদের মানবদেহের যেকোনো বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করা সম্ভব। তাহলে জিন কি আর মিউটেশনই বা কি? 


জিন হলো ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) এর একটি অংশ, যা জীবের বৈশিষ্ট্য এবং কার্যকারিতা নির্ধারণ করে। অর্থাৎ আপনি দেখতে কেমন হবেন, আপনার বুদ্ধি কিরকম হবে, আপনার রুচি-ব্যবহার কিরকম হবে ইত্যাদি এরকম সকল বৈশিষ্ট্যই নির্ধারণ করা থাকে জিনের ভিতরে। অনেকগুলো জিনকে একত্রে বলে জিনোম। আর মিউটেশন হলো ডিএনএ সিকোয়েন্সে পরিবর্তন, যা জিনের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। অর্থাৎ মনে করুন আপনার জিন অনুযায়ী আপনি লম্বা হবেন কিন্তু এখন যদি আপনার ডিএনএ বা জিনোম সিকুয়েন্সের যে জিনটি আপনার লম্বা হওয়ার বৈশিষ্ট্য বহন করছে সেটাতে আপনি পরিবর্তন করে খাটো হওয়ার বৈশিষ্ট্য ঢুকিয়ে দিলেন। এই পরিবর্তন করাটাই হলো মিউটেশন। আর আপনার মধ্যে মিউটেশন হলে আপনি একজন মিউট্যান্ট।


সহজ ভাষায় কোনো জীবের জিনোম সিকুয়েন্স নিয়ে কাজ করাই হলো জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং। মানুষের জীনোম সিকুয়েন্সে পরিবর্তন এনে তাকে সুপারহিউম্যান বানানো সম্ভব। জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর যত গুলো মেথড বা পদ্ধতি রয়েছে (যেমনঃ CRISPR-Cas9 প্রযুক্তি, রিকম্বিন্যান্ট ডিএনএ প্রযুক্তি, জিন থেরাপি, জিন ক্লোনিং ইত্যাদি) তাদের মধ্যে সব থেকে সম্ভাবনাময় হলো "CRISPR-Cas9" প্রযুক্তি যা একটি জিন এডিটিং টুল। এই টুলের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্ট জিনকে টার্গেট করে সেটি পরিবর্তন, মুছে ফেলা বা নতুন জিন যোগ করতে পারেন। এই প্রযুক্তি চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছে, যেমন ক্যান্সার, এইডস এবং জেনেটিক রোগের চিকিৎসা।


তবে জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার মোটেও এরকম সহজ কিছু নয়। বিষয়গুলো অনেক কমপ্লেক্স আর সেনসিটিভ। বিষয়টা এরকম না যে আপনার বুদ্ধির জন্য যে জিন আছে সেই জিনের মিউটেশন করলেন আর আপনি একজন সুপার কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য পেয়ে গেলেন। যেমন সৌন্দর্য্য, বুদ্ধি, শক্তি ইত্যাদিসহ মানবদেহের  আরও অনেক বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলোর জন্য মাল্টিপল জিন দায়ী। এর পাশাপাশি জিন তার চারপাশের পরিবেশ দাড়াও প্রভাবিত হয়ে জীবের বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে থাকে। যদিও এসব এক্সপেরিমেন্ট মানবদেহে করার কোনো প্রমাণ মিলে নি কিন্তু অন্যান্য প্রানী যেমন ইদুর, খরগোশ ইত্যাদিতে করতে দেখা গেছে এবং বিজ্ঞানীরা সফলও হয়েছেন।


আসুন মানবদেহের কিছু সুপার পাওয়ারওয়ালা জিনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিই যেগুলোর পরবর্তন করে আসলেই আপনি একজন সুপার ইউম্যান তথা সুপার হিরো হতে পারবেন।


✅ Speed Gene - আমাদের সবার শরীরে একটি জিন থাকে যেটির নাম ACTN3 আর এই জিনটি পেশী তন্তুগুলির দ্রুত নড়াচড়ার জন্য দায়ী একটি প্রোটিন তৈরির নির্দেশনা প্রদান করে, যা আমাদের দৌড়াতে সক্ষম করে। আপনার ACTN3 জিন পরিবর্তন করে আপনি ডিসি সুপারহিরো 'ফ্ল্যাশ' এর মতো নাহলেও হয়তো হুসাইন বোল্টকে ঠিকই দৌড়ে হারাতে পারবেন।


✅  Bone Gene - এই জিনের নাম হলো LRP5 যা আমাদের হাড়ে ঘনত্ব আর শক্তি নিয়ন্ত্রণ করে। G171V মিউটেশন হাড়ের খনিজ ঘনত্ব বৃদ্ধি করে, যার ফলে অস্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী এবং পুরু হাড় তৈরি হয় এবং হাড় ভাঙা থেকে উচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতা লাভ করা যায়। এর মাধ্যমে আপনি "The Incredible Hulk" এর মতো শক্তিশালী না হলেও জন সিনা বা ব্রোউন স্ট্রোম্যান এর থেকেও বেশি শক্তিশালী হতে পারবেন।


✅ Pain Insensitivity Genes - শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এরকম রোগও আছে যে রোগের কারণ সেই মানুষটা কখনো কোনো রকমের পেইন বা ব্যাথা অনুভব করতে পারেন না। ধরুণ আপনাকে আঘাত করা হয়েছে বা আপনার একটা হাত/পা কেটে ফেলা হয়েছে কিন্তু আপনি কোনো ব্যাথা অনুভব করতে পারছেন না। এই রোগটাকে বলে CIP (Congenital Insensitivity to Pain). SCN9A, FAAH, PRDM12 জিনের মিউটেশনের জন্য সিআইপি রোগ হয়। এই জিনগুলোর মিউটেশনের মাধ্যমে আপনি ডিসি সুপারহিরো Cyborg না হতে পারলেও ব্যাথা বিহীন মানুষ ঠিকই হতে পারবেন। প্রেমে ছ্যাকা খেলে সেটা আলাদা ব্যাপার হলেও হতে পারে।


✅ The Sleepless Gene - স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের ব্রেইন কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং এই ক্লান্তিভার দূর করতে আমাদের প্রতিদিন ঘুম প্রয়োজন হয় মিনিমাম ৬-৮ ঘন্টা। কিন্তু আপনি যদি DEC2,  ADRB1 জিনে মিউটেশন ঘটান তাহলে আপনার তেমন কোনো ঘুমেরই প্রয়োজন পড়বে না। অতি সামান্য ঘুমেও আপনার তেমন কোনো সমস্যাই হবে না, না থাকবে স্বল্প ঘুমের জন্য হওয়া স্বাস্থ্য ঝুকি। আপনার ব্রেইন থাকবে একদম স্বাভাবিক।


✅ EPAS1 Gene -  পৃথিবী থেকে যত উপরে যাবো তত অক্সিজেনের পরিমাণ কমতে থাকে। আর অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিলে আপনার শরীরও কাজ করা কমিয়ে দিবে অথবা আপনি মারাও যেতে পারেন। কিন্তু EPAS1 জিন রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এই জিনের মিউটেশনে আপনি এলিয়েনদের মতো মঙ্গল গ্রহে শ্বাস নিতে না পারলেও মাউন্টেন্ট এভারেস্টে ঠিকই শ্বাস নিয়ে বেচে থাকতে পারবেন।


এরকম আরও অনেক সুপার পাওয়ার ওয়ালা জিন আমাদের শরীরে আছে যেগুলোর মিউটেশন করিয়ে আমরা হয়তো সাই-ফাই মুভি, কমিক্সের মতো পাওয়ারফুল সুপার হিউম্যান হতে পারবো না কিন্তু অন্যান্য মানুষদের তুলনায় বেশ খানিকটা আলাদা বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ঠিকই হতে পারবো হয়তো। যদিও বা এরকম সুপার হিউম্যানের কোনো নজির এখনো পাওয়া যায় নি। আপনি ট্রাই করলে আপনিই হয়তো হয়ে যেতে পারেন প্রথম সুপার হিউম্যান ইন রিয়্যাল লাইফ।


সব থেকে মজার ব্যপার হলো ২০১৮ সালে চীনের কিছু বিজ্ঞানী প্রথমবারের মধ্যে Gene-Edited বেবি জন্ম দিতে সফল হয়। যমজ দুই বাচ্চার বাবা এইচআইভি আক্রান্ত ছিল, কিন্তু বিজ্ঞানীরা সেই বাচ্চাদের ভ্রুণের জিনোম সিকুয়েন্স এমন ভাবে চেঞ্জ করে দেয় যাতে বাবার থেকে পাওয়া এইচআইভির জিন বা ডিএনএ তাদের শরীরে না আসে এবং তারা এই কাজে সফলও হন। এই ঘটনার পর সারা বিশ্বে এক বিশাল আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। কিন্তু চাইনিজ বায়োফিজিসিস্ট He Jiankui এই বিজ্ঞানীদের "Rogue Scientist" বলে আখ্যা দেয় এবং চাইনিজ সরকার মানব ভ্রূণে জিন সম্পাদনা নিষিদ্ধ থাকায় চীনা আইন লঙ্ঘনের জন্য সেই বিজ্ঞানীদের তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়। বর্তমানে খুবই কম সংখ্যক দেশই মানব ভ্রূণে জিন সম্পাদনার অনুমতি দেয় এবং কোথাও এই ধরনের ভ্রূণ গর্ভে স্থাপন করা বৈধ নয়। 


তাহলে এখন বলুন কবে হচ্ছেন সুপারহিরো? আর সুপারহিরো হলে কোন সুপারহিরো হতে চান? 


Sources: 

--------------

ℹ️ BBC Science Focus Magazine: https://www.sciencefocus.com/future-technology/could-we-make-a-superhuman


ℹ️ Medicover Genetics: https://medicover-genetics.com/can-a-genetic-change-make-you-superhuman/


ℹ️ Wikipedia: https://en.wikipedia.org/wiki/Superhuman

আরো দেখতে, এই বিভাগের সকল প্রশ্ন দেখুন
সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। এখানে আপনি আপনার বিভিন্ন বিষয়ে ব্যক্তিগতসহ যেকোনো সমস্যার সমাধান চেয়ে প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সহযোগীতা করতে পারবেন। আজই আমাদের সাথে শুরু করে দিন আপনার পথচলা।
...