সাধারণ ডট নেটে আপনাকে স্বাগতম! রেজিষ্ট্রেশন করে আজই আমাদের পরিবারের সদস্য হয়ে যান...

বিনোদন - প্রশ্ন উত্তর

0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
থ্যানোস কেন ভিলেন? এর পিছনে কাহিনী কি?

image

থ্যানোসকে আমরা সবাই ভিলেন বলেই চিনি। মার্ভেল কমিক্স বা মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সে এখন পর্যন্ত সব থেকে পাওয়ারফুল আর জনপ্রিয় ভিলেন হলো Thanos. কিন্তু আসলেই কি ভিলেন? কেন সে ইউনিভার্সের অর্ধেক পপুলেশন শেষ করে দিতে চেয়েছিলো? এতে তার লাভ কি? 


যারা মার্ভেল দেখেন তারা হয়তো জানেনই এই প্রশ্নের উত্তর গুলো। আমি মার্ভেলের চরম ভক্ত হয়েও কখনো মার্ভেল নিয়ে লেখা হয় নাই কিন্তু আজকে আমি একটু ভিন্ন ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করবো থ্যানোসকে। কারণ আমি থ্যানোসকে অনেক পছন্দ করি তো এই আর কি!


কেউ কি জন্মগত ভাবে ভিলেন হয়ে জন্মায়? না কেউ জন্ম থেকেই ভিলে হয়ে জন্মায় না, বরং তার ভিলেন হওয়ার পিছনে অনেক বড় একটা ট্রাজেডি থাকে। এরকমটাই হয়েছিলো থ্যানোসের সাথে। থ্যানোসের গ্রহের নাম ছিলো "টাইটান"। বলা হতো ইউনিভার্সের সব থেকে সমৃদ্ধ গ্রহ ছিলো টাইটান। এই কারণে টাইটান গ্রহের মানুষ কোনো কিছুর অভাব ছিলো না। কিন্তু তারা অনেক সম্পদের অপচয় করতেন অনেক। মহাবিশ্বে সম্পদের পরিমাণ সীমিত। কিন্তু এসবের তোয়াক্কা না করেই টাইটানবাসী সম্পদের অনরগল অপচয় করতে থাকে।


থ্যানোস অনেক বুদ্ধিমান ছিলো তাই খারাপ কিছুর পুর্বভাস সে অনেক আগে থেকেই পেয়ে গেছিলো। এই জন্য তার গ্রহের মানুষদের সে সতর্ক করে সম্পদের সঠিক ব্যবহারের জন্য। অনেক চেষ্টা করেও থ্যানোস ব্যার্থ হয়, কেউ তার কোনো কথাই গায়ে লাগাই নাই। একদিকে সম্পদের অপচয় আবার অপরদিকে জনসংখ্যার বৃদ্ধি এই দুইয়ে মিলে যেটা হওয়ার সেটাই হয়।


এরকম করে চলতে থাকায় একসময় টাইটান গ্রহের সকল সম্পদ শেষ হয়ে যায়। সময় থাকতে কোনো ব্যাকআপ প্ল্যান না থাকায় টাইটান গ্রহ একদম ধংস হয়ে যায়। বলতে গেলে দুর্ভিক্ষের মতো গ্রহের সব মানুষ একসময় অনাহারে মারা যায়। চোখের সামনে থ্যানোস তার পরিবার সহ পুরো গ্রহকে শেষ হতে দেখো। কিন্তু এখন প্রশ্ন হতেই পারে যে, সবাই মারা গেলে থ্যানোস বেচে গেলো কিভাবে? 


থ্যানোস ছিলো টাইটান গ্রহের ইটার্নাল বংশোদ্ভুতো একজন। এই কারণেই সে ছোটো বেলা থেকেই এক দৈবিক ব্যপার ছিলো তার মধ্যে। সে সব কিছুর পুর্বাভাস আগে থেকেই পেয়ে যেতো আর সকল খারাপ পরিস্থিতিতে নিজে সেফ রাখতে পারতো। তার মধ্যে টেলিপোর্টেশন পাওয়ারও ছিলো যার মাধ্যমে সে ইউনিভার্সের যেকোনো যায়গায় মুহুর্তের মধ্যে টেলিপোর্ট হতে পারতো। এই জন্যই সে সকল পরিস্থিতি থেকে বেচে যায়।


যখন সে নিজের গ্রহ টাইটান ও তার সব আপন জনদের চোখের সামনে ধংস হতে দেখে তখন সে নিজেকে অনেক অপরাধী মনে করতে থাকে। কেননা তাদের জন্য থ্যানোস কিছুই করতে পারে নি। নিজেকে একবার থ্যানসের জায়গায় দাড় করান তাহলে ফিল করতে পারবেন।


এরপর থেকেই থ্যানোস চিন্তা করে সে নিজে যে পেইনটা সহ্য করছে সেটা যেনো আর কেউ না করে। এভাবে চলতে থাকলে এক এক করে ইউনিভার্সের সকল গ্রহই ধংস হয়ে যাবে। কারণ মহাবিশ্বের সম্পদের পরিমাণ কমতে ছিলো আর সেই সাথে বাড়ছিলো জনসংখ্যা বিপুল হারে।  তাই থ্যানস সিদ্ধান্ত নেয় সে ইউনিভার্সকে ঠিক করবে মানে এই ধংসের হাত থেকে রক্ষা করবে। কিন্তু কিভাবে? 


থ্যানোস ঠিক করলো সে ইউনিভার্সের অর্ধেক মানুষ বা প্রানীকে ধংস করবে, এতে করে সম্পদের অপচয় বা ব্যবহার কমে যাবে আর পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ইউনিভার্সে পর্যাপ্ত সম্পদ থাকবে। এভাবেই বেচে যাবে ইউনিভার্স। 


এরপর থেকেই সে ইউনিভার্সের ৬টি ইনফিনিটি স্টোন কালেক্ট করা শুরু করে। এখানেই হয়ে যায় সে ভিলেন। ইউনফিনিটি স্টোন গুলো কালেক্ট সেগুলোর শক্তি একখানে করে সে একটা চুটকি দিলেই মুহুর্তেই ইউনিভার্সের অর্ধেক পপুলেশন গায়েব হয়ে যাবে, যেটাকে কমিক্সে বলা হয় ব্লিপ (Blip). এখানেই সে হয়ে যায় ভিলেন, মহা ভিলেন। এক এক করে ৬টি ইনিফিনিটি স্টোন কালেক্ট করতে গিয়ে চালায় মহা তান্ডব। শেষমেশ কালেক্ট করে থ্যানোস একটা স্ন্যাপ বা চুটকি দেয় আর সাথে সাথে শুরু হয়ে যায় সেই ব্লিপ। গায়েব হয়ে যেতে থাকে ইউনিভার্সের অর্ধেক প্রাণী। 


টুইস্টটা এখানেই যে, থ্যানোস যা করেছে তা তো ইউনিভার্সকে রক্ষা করার জন্যই করেছে তাহলে আজকে সে কেন ভিলেন? তাকে তো সুপার হিরো বলার কথা। যাদের জন্যে করলাম চুরি তারাই বলে চোর? সবার কথা চিন্তা করেই ইউনিভার্স ধংসের হাত থেকে রক্ষা করেও ভিলেন হয়ে গেলাম? আমরা হলে তো এটাই চিন্তা করতাম।


থ্যানোসের কাজের পিছনে মহৎ একটা উদ্দেশ্য ছিলো ঠিকই কিন্তু তার কাজ করার প্রসেসটা ছিলো ভুল। ঠিক যেমন, মাথায় ব্যথা করলে মাথাই কেটে ফেলা। থ্যানোস ইউনিভার্সকে রক্ষা করার জন্য যে পথে কাজ করে সেটা ছিলো ভুল, কিন্তু তার কাজের পিছনের উদ্দেশ্য ছিল অনেক ভালো। আর এই পথের জন্যই সে সবার কাছের ভিলেন। 


মানুষ আপনার কাজের উদ্দেশ্য দেখার আগে আপনার কাজের ধরণ, পথ দেখে বিচার করবে। আপনি যত বড় উদ্দেশ্য নিয়েই কাজ করেন না কেন সেটা কেউ দেখতে যাবে না, দেখবে আপনি কি করেছেন। আর এটা দিয়েই মানুষ বিচার করবে। তাই কাজের উদ্দেশ্য ঠিক করার সাথে সাথে কাজের প্রসেসটাও সঠিক পথে হওয়া উচিত নাহলে কাজের উদ্দেশ্য কোনো মাইনে রাখে না। কাজের বিচার সবাই করতে পারে, করবেও কিন্তু কাজের উদ্দেশ্যের বিচার সবাই করতে পারে না। 


আপনার চিন্তা করার ওয়েই আপনাকে সবার কাছে হিরো বানাতে পারে আবার ভিলেনও। আপনি ঠিক করুন আপনি কি হবেন। ভিলেন হলে হয়তো দিনশেষে নিজের কাজের জন্য নিজের কাছে খুশি হবেন ঠিকই কিন্তু আপনার কাজের জন্য কষ্ট সহ্য করতে হবে অন্যকে। 

একটা প্রশ্ন করে নিজে জানুন অন্যকে জানতে সহায়তা করুন
সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। এখানে আপনি আপনার বিভিন্ন বিষয়ে ব্যক্তিগতসহ যেকোনো সমস্যার সমাধান চেয়ে প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সহযোগীতা করতে পারবেন। আজই আমাদের সাথে শুরু করে দিন আপনার পথচলা।
...