সাধারণ ডট নেটে আপনাকে স্বাগতম! রেজিষ্ট্রেশন করে আজই আমাদের পরিবারের সদস্য হয়ে যান...
avatar
0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ

মোনালিসার হাসি কি আসলেই রহস্যময়? কেন?

কি আছে এই মোনালিসার হাসিতে?

1 টি উত্তর

avatar
0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ

image


মোনালিসা!!! নামটি শুনলেই সবার প্রথমে একটা জিনিসই মাথায় আসে আর সেটা হলো একটি বিখ্যাত চিত্রকর্ম যেটা একে ছিলেন শিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চি। আহ! কি সুন্দর রহস্যময় একটি হাসি! কিন্তু তার হাসি কি আসলেই রহস্যময়? কি আছে এই হাসির পিছনে, কে এই মোনালিসা সেই গল্পই করবো আপনাদের সাথে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক একদম শুরু থেকে…

ধারণা করা হয়, মোনালিসা চিত্রকর্মটি লিওনার্দো দা ভিঞ্চি ১৫০৩ থেকে ১৫১৯ সালের মধ্যে আর্ট করেন। মজার ব্যপার হলো লিওনার্দো দা ভিঞ্চি মারা যান ১৫১৯ সালে তার মানে তিনি তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এটি আকতে থাকেন। কিন্তু এটা কার মুখ যে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর্ট করেই গেলেন? বউ এর ছবি হয়তো, এটা অনেকের মনে আসতেই পারে। কিন্তু লিওনার্দো দা ভিঞ্চি কখনো বিয়েই করেন নি। তাহলে কার ছবি হতে পারে?

অনেকে মনে করেন, মোনালিসা হয়তো লিওনার্দোর কুমারী অবস্থায় তার মা, আবার কেউ মনে মোনালিসা হয়তো তার কোনো বান্ধবী। আবার সব থেকে আলোচিত একটা ধারণা যেটা হলো মোনালিসা একজন ব্যবসায়ীর স্ত্রীর প্রতিকৃতি। একজন ফ্লোরেন্টাইন ব্যবসায়ী যার নাম ফ্রান্সেস্কো ১৫০৩ সালে লিওনার্দো এবং অন্য আরেকজন শিল্পীকে তার স্ত্রী প্রতিকৃতি আর্ট করার জন্য কাজ দেন। তাদের মধ্যে একটা চুক্তিও হয়। লিওনার্দোর সাথে চুক্তি ছিলো যে ১৫০৫ সালের মধ্যে তার কাজ যেন শেষ হয় কিন্তু ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো লিওনার্দো সেটা করতেই পারে নি মানে তখনও মোনালিসার চিত্রকর্ম অসম্পুর্ণ ছিল তাই লিওনার্দো তার এই কাজের জন্য কোনো পেমেন্ট পান নি। তবে এই চিত্রকর্মের নামকরণ করা হয় ১৫৫০ সালে। 

অনেকের মতে, মোনালিসার চিত্রকর্ম লিওনার্দো ১৫১৬ সালেই শেষ করেন আবার অনেকে বলেন যে, না! লিওনার্দো কখনোই এই চিত্রকর্ম শেষ করতে পারেন নি। সেটা যাই হোক, কিন্তু লিওনার্দোর মৃত্যুর পর ফরাসি রাজাদের ব্যক্তিগত সংগ্রহে ছিল এই মোনালিসা চিত্রকর্ম। ফরাসি বিপ্লবের পর নেপোলিয়ন বোনাপার্টের শোবার ঘরে জায়গা করে মোনালিসা। ১৮১৫ সালে জনসাধারণের দেখার জন্য ‘ল্যুভর মিউজিয়াম’-এ স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু ১৯১১ সালে একজন ইতালীয় জাতীয়তাবাদী ‘পেরুজিয়া’ নামক একজন ব্যক্তি ল্যুভর থেকে ছবিটি চুরি করে। দুই বছর পর ইতালিতে পুনরুদ্ধার করা হয় এবং আবার ল্যুভর মিউজিয়ামে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে ল্যুভর মিউজিয়ামের "Salle des États" এ কড়া নিরাপত্তার অধীনে প্রদর্শিত হচ্ছে। ল্যুভ জাদুঘরের তথ্যমতে প্রায় ৮০% পর্যটক শুধু মোনালিসার চিত্রটি দেখার জন্য আসে। 

তাহলে এখন জানা যাক, মোনালিসার হাসি এতো রহস্যময় কেন? কি আছে এই হাসিতে?
প্রথমত, মোনালিসার হাসি দেখে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় না সে সুখী নাকি দুঃখী নাকি রাগান্বিত নাকি অন্য কোন আবেগ প্রকাশ করছে। এই বিষয়টাই মানুষের মধ্যে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করার সুযোগ করে দেয় আর এই জন্যই একেক জন তার হাসির ব্যাখ্যা একেক ভাবে দেন। এভাবেই শুরু হয় রহস্য।
দ্বিতীয়ত কিছু লোক বিশ্বাস করেন যে, মোনালিসার হাসি নাকি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়। এমনটাও বলে যে, বিভিন্ন সময়ে ছবিটি দেখলে বিভিন্ন বিভিন্ন আবেগ প্রকাশ পায় তার হাসিতে। এটা আসলেই রহস্যের বিষয়।
আবার মোনালিসার আসল পরিচয় ২০০৫ সালে প্রমাণিত হলেও এখনো অনেকে মনে করেন যে মোনালিসার আসলে একটা কাল্পনিক চরিত্র মাত্র। এই প্রতিকৃতির কেউ নেই, লিওনার্দো তার মনের মতে করে অপরিচিত কাউকে আর্ট করেছিলেন।
মোনালিসার এই হাসির রহ্স্য অনেকেই অনেক ভাবেই ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। কয়েক শতাব্দী থেকে যেসব সমীকরণ মানুষ এখনো মিলাতে পারে নি তাদের মধ্যে মোনালিসার এই হাসি হচ্ছে একটি। আর এই কন্টোভার্সির জন্যই মোনালিসা চিত্রকর্মের ইতিহাসে সব থেকে বিখ্যাত আর সব থেকে আলোচিত চিত্রকর্ম।

এবার তাহলে মোনালিসা সম্পর্কে আরোও কিছু মজার আর ইন্টারেস্টিং কথা শেয়ার করিঃ

১) আগেই বলেছি যে, লিওনার্দো মোনালিসাকে কখনই সম্পূর্ণ করতে পারেননি, এটি একটি অসম্পূর্ণ চিত্রকর্ম যেটা সে তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত করে গেছেন।

২) মোনালিসার আসল নাম ছিলো ‘লিসা দেল জোকোন্দো’ যেটি প্রমাণিত হয় ২০০৫ সালে। যদিও এটা নিয়ে এখনো কন্ট্রোভার্সি আছেই তবে লিসা দেল জোকোন্দোকে নিয়ে উইকিপিডিয়াতে মোনালিসার থেকেও বড় একটা উইকি পেজই আছে, জানার কৌতুহল থাকলে পড়তেই পারেন।

৩) চিত্রকর্মটি প্রথমে পপলার কাঠের একটি প্যানেলে আঁকা হয়েছিল।

৪) ফরাসি বিপ্লবের সময় এটি রক্ষা করার জন্য মোনালিসা একসময় রান্নাঘরের জন্য ব্যবহৃত একটি ছোট ঘরে লুকিয়ে ছিল।

৫) কিছু লোক মনে করেন যে, মোনালিসাতে কোন হাসি নেই, বরং একটি সূক্ষ্ম ভ্রু রয়েছে। 

৬) অনেকে আবার বিশ্বাস করেন যে, মোনালিসার চোখে "LV" অক্ষর লুকিয়ে আছে, যা লিওনার্দো দা ভিঞ্চির নামের প্রতীক। যদিও আমি অনেক জুম করেও কিছুই পাই নি।

৭) কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন,  মোনালিসার মুখের অস্পষ্ট ফোলাভাব ইঙ্গিত দেয় যে সে গর্ভবতী। মানে মোনালিসা বিবাহিত।

৮) ২০০৫ সালে মোনালিসাকে একটি বিশেষ বাল্টে করে জাপানে একটি প্রদর্শনীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এটি ছিল প্রথমবার মোনালিসার ফ্রান্সের বাইরে ভ্রমণ।

৯) মোনালিসা চিত্রকর্মের নামে কোনো বীমা করা হয়নি তাই মোনালিসা চিত্রকর্মের মুল্য নির্ধারণ করাও সম্ভব নয়। এই জন্যই এখন পর্যন্ত এই চিত্রকর্ম কোথায় বিক্রি হয় নি, আর কখনো বিক্রি হবেও না। 

Sources:
---------------


 


এরকম আরও প্রশ্ন

0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
মানুষ কি আসলেই মঙ্গলে বাস করতে পারবে? ফ্যাক্ট নাকি মিথ?
আসুন বিস্তারিত জানি উত্তরে।
0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
সর্বপ্রথম 'বঙ্গ' শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায় কোথায়?
সর্বপ্রথম 'বঙ্গ' শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায় কোথায়?
0 টি পছন্দ 0 টি অপছন্দ
ফুটপাতে হলুদ রঙ এর লাইন কেন বানানো হয়?

ফুটপাতে হলুদ রঙ এর লাইন কেন বানানো হয়?

সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। এখানে আপনি আপনার বিভিন্ন বিষয়ে ব্যক্তিগতসহ যেকোনো সমস্যার সমাধান চেয়ে প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সহযোগীতা করতে পারবেন। আজই আমাদের সাথে শুরু করে দিন আপনার পথচলা।
...